স্টাফ রিপোর্টার
কুমিল্লায় মা-মেয়েকে হত্যার প্রধান আসামি কথিত কবিরাজ মো. মোবারক হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহামেদ খাঁন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল সোমবার এ কবিরাজকে ঢাকা যাওয়া পথে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে। এছাড়া কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকায় ভাড়া থাকতেন তিনি।
মোবারক হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লোক বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন রিনথিকে কথিত জ্বীনে ধরায় মা তাহমিনা বেগম এক মাদরাসার হুজুরের কাছে ঝাড়-ফুক করার জন্য যেতেন। সেখানে মোবারক হোসেনের সাথে পরিচয় হয় তাহমিনা বেগমের। মোবারক হোসেনকে তাহমিনা বেগম বলেন, তার মেয়ে আফরিনকে বাসায় গিয়ে ঝাড়-ফুঁক দিতে। আনুমানিক একমাস ধরে মোবারক হোসেন তাহমিনা বেগমের বাসায় যাতায়াত করতেন।
ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৮টায় মোবারক হোসেন একটি কমলা রঙের শপিং ব্যাগ এবং কালো রঙের একটি ব্যাগ নিয়ে তাহমিনা বেগমের বাসায় যান। এ সময় তিনি আফরিনকে ঝাড়-ফুঁক করে বাসায় পানি ছিটায়। মোবারক হোসেন বেলা সাড়ে ১১টায় বাসার বাহিরে যান। এর কিছুক্ষণ পর পুনরায় তাহমিনা বেগমের বাসায় আসেন।
পরে মোবারক হোসেন আফরিনের রুমে গিয়ে তাকে ধর্ষণ চেষ্টা করার সময় মা তাহমিনা বেগম দেখে ফেলেন। এ সময় তিনি মোবারক হোসেনকে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে মোবারক হোসেন ও তাহমিনা বেগমের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একসময় তাহমিনা বেগমকে তার রুমে নিয়ে গিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপরই আফরিনের রুমে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণ চেষ্টা করে মোবারক হোসেন। আফরিন প্রতিরোধ করতে গেলে তাকে গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মোবারক। এর পরপরই মোবারক তাহমিনা বেগমের ঘর থেকে ৪টি মোবাইল ও ১টি ল্যাপটপ চুরি করে পালিয়ে যায়।
জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহামেদ খান বলেন, এই কবিরাজ নিয়মিত তাদের বাসায় যাতায়াত করতেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। আমরা তাকে কারাগারে পাঠনোর ব্যবস্থা করছি।
উল্লেখ্য, সোমবার ভোরে কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুড়ি এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে মা এবং মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।