বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
সারাদেশে
কুমিল্লায় ডেঙ্গুতে সংবাদপত্র কর্মীর মৃত্যু কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত ইয়াছিনের সমর্থকদের মশাল মিছিল পদোন্নতি পেলেন ২৭৩ এসআই ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ১৪৭ জন কুমিল্লার ইয়াছিনকে মনোনয়ন বঞ্চিত করায় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ কুমিল্লার ৯টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা ২৩৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা কুমিল্লা সীমান্তে মাদকের প্যাকেটে আগ্নেয়াস্ত্র, উদ্ধার করল বিজিবি লালমাইয়ে লাগসই প্রযুক্তির প্রয়োগ ও সম্প্রসারণ শীর্ষক সেমিনার ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত বুড়িচং আলোচিত তুহিন হত্যার আসামি গ্রেফতার, আদালতে স্বীকারোক্তি

কুমিল্লার ঐতিহ্যের বাতিঘর শাহ্ সুজা মসজিদ

  • আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫
  • ১০১ দেখেছেন :

স্টাফ রিপোর্টার ||

শাহ্ সুজা মসজিদ, কুমিল্লা নগরীর একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। মসজিদটি চুন-সুরকির শক্ত বন্ধনে নির্মিত। শুধু ইবাদতের স্থান নয়, হয়ে উঠেছে মোগল যুগের শিল্প, সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের জীবন্ত দলিল।

নগরীর মোগলটুলীতে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে আছে এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি। মসজিদটি চারশ বছরের পুরনো। স্থানীয় জনশ্রুতি অনুযায়ী ১৬৫৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজার শাসনামলে নির্মিত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। সেই সময়ের মোগল ফৌজদার কুমিল্লা শহরাঞ্চলের মোগলঘাঁটির মুসলমানদের জন্য নামাজের স্থান হিসেবে এ মসজিদ নির্মাণ করেন।

আয়তনে ছোট হলেও মসজিদটির প্রতিটি ইঞ্চি যেন গৌরবের গল্প বলে। তিনটি গম্বুজবিশিষ্ট এই মসজিদের কেন্দ্রীয় গম্বুজটি দুই পাশের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বড়। চার কোণায় রয়েছে চারটি অষ্টকোণাকৃতি মিনার। সামনের দেয়ালে রয়েছে তিনটি প্রবেশদ্বার, যার মধ্যে কেন্দ্রীয়টি বিশেষভাবে বড় ও অলঙ্কৃত।

মসজিদের পশ্চিম দেয়ালে রয়েছে তিনটি মেহরাব, যার মাঝেরটি আকৃতিতে অন্যান্যদের চেয়ে প্রশস্ত। সামনের প্যানেল ও কার্নিশের ওপরে ব্যাটলম্যান্ট এবং তার ওপরে একটি চমৎকার গম্বুজ স্থাপত্যশৈলীর নিখুঁত সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলে।

স্থানীয় আব্দুল আবাদ বলেন, এই মসজিদে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আল্লাহওয়ালা লোকজন আসেন। ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হন। মসজিদ আমাদের জন্য একটি গর্বের প্রতীক এবং প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

এ মসজিদের মুসল্লি মহসিন মিজি বলেন, সব মসজিদই ইবাদতের স্থান। তবে শাহ্ সুজা মসজিদের কারুকার্য, গম্বুজ ও মিনারের শৈল্পিক সৌন্দর্য হৃদয়কে নাড়িয়ে দেয়। এখানে এলে মানসিক প্রশান্তি অনুভব করি।

মসজিদের খতিব মুফতি খিজির আহমদ ক্বাসেমী বলেন, প্রতিদিন এখানে বহু মুসল্লি নামাজ পড়তে আসেন। জুমার দিনে প্রায় দুই হাজারের বেশি মুসল্লি এখানে একত্রিত হন।

ইতিহাসবিদ আহসানুল কবির বলেন, এই মসজিদ মোগল স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন। সম্ভবত শহরের মোগলঘাঁটি অঞ্চলের মুসলমানদের জন্য তৎকালীন ফৌজদার মসজিদটি নির্মাণ করেন এবং এটি শাহ্ সুজার নামে নামাঙ্কিত হয়। মসজিদে প্রথম খুৎবা প্রদানকারী ছিলেন শহরের কাজী, কাজী মনসরুল হক (রহ.)। ঐতিহাসিক নিদর্শন শুধু প্রাচীন ভবন নয়, সেগুলো একটি জাতির আত্মপরিচয়, সংস্কৃতি ও গৌরবের প্রতীক। শাহ্ সুজা মসজিদও তেমনি একটি নিদর্শন, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে কুমিল্লা শহরের মাটিতে ঐতিহ্যের বাতিঘর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই মসজিদ শুধু ইবাদতের স্থান নয়, এটি ইতিহাসের এক নীরব পাঠশালা।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনন্য ক্যাটাগরির সংবাদ
© All rights reserved © Comillakantha.com
Theme Customized By Mahfuz