
প্রতিনিধি, বুড়িচং
কুমিল্লায় কলেজছাত্র মো. তুহিন হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে। মঙ্গলবার জেলার বুড়িচং উপজেলার এরশাদ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকসহ এলাকাবাসী উপজেলা সদরে এ কর্মসূচি পালন করে। হত্যাকাণ্ডের শিকার তুহিন ওই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র এবং ওই উপজেলার বাহেরচর গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে।
এর আগে প্রেমিক যুগলকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতার অভিযোগ তুলে কলেজছাত্র তুহিনকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় ৭ দিন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ে সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার এ খবর কলেজসহ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ স্থানীয় এলাকার লোকজনের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করে বুড়িচং থানায় মামলা করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুড়িচং উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের মেয়ে সম্প্রতি তার প্রেমিক কণ্ঠনগর গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে মো. উজ্জ্বলের সাথে পালিয়ে যান। পরে ওই মেয়ে ফেসবুক লাইভে এসে তারা বিয়ে করেছেন বলে জানান। এদিকে মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রেমিক উজ্জলকে ‘সহযোগিতার’ জন্য তুহিনকে দায়ী করেন মেয়ের বাবা সাইফুল ইসলাম। মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২০ অক্টোবর রাতে সাইফুল তুহিনকে গোবিন্দপুর গ্রামে ধরে নিয়ে একটি ভবনে আটকে রেখে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন।
তুহিনের মা ফেরদৌসী আক্তার সমকালকে বলেন, আশংকাজনক অবস্থায় আমার ছেলেকে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হলে লাইফ সাপোর্টে থেকে ৭ দিন পর সোমবার রাতে সে মারা যায়। তিনি আরও বলেন, আমার ছেলের কোন অন্যায় ছিল না, তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।
এদিকে তুহিনের মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা তুহিন হত্যায় অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম বাবুসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে। তারা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন শেষে উপজেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দাখিল করে। এ ঘটনায় তুহিনের মা ফেরদৌসী আক্তার বাদী হয়ে সাইফুল ইসলাম বাবু, নাফিজ উদ্দিন, জহির মিয়া ও আবদুল আলিমকে আসামি করে বুড়িচং থানায় মামলা করেন।
বুড়িচং থানার ওসি মো. আজিজুল হক রাতে জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।