
দাম্পত্য কলহের জেরে স্বামীর সহায়তায় স্ত্রীকে তিন দিন ধরে ইটভাটায় আটকে রেখে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানী এলাকার ‘ইসলামিয়া ব্রিক ফিল্ডের’ শ্রমিকদের থাকার ঘরের একটি কক্ষে এই ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার দুপুরে চৌদ্দগ্রাম থানায় স্বামীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– নোয়াখালীর সুধারাম থানার রামহরিতালুক গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে রাজু আহমেদ, একই গ্রামের বেলাল হোসেন, হৃদয়, মহিন উদ্দিন, একই থানার মুন্সীতালুক গ্রামের আবুল কালাম।
এজাহারে বলা হয়, ওই নারীর (২০) স্বামী চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিরশ্বানী এলাকার ইসলামিয়া ব্রিক ফিল্ডের শ্রমিক। ২০২৩ সালে তাদের বিয়ে হয়। স্বামী মাদকাসক্ত হওয়ায় বনিবনা হচ্ছিল না। এই কারণে ওই নারী নোয়াখালীর সুধারাম থানার একটি গ্রামে তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যান। চলতি মাসের প্রথম দিকে উভয় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিষয়টির সমঝোতা হলে স্ত্রীকে পুনরায় বাড়িতে নিয়ে যান। গত ১৫ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে থাকার কথা বলে স্ত্রীকে কৌশলে মিরশ্বানী এলাকায় ইসলামিয়া ব্রিক ফিল্ডে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে গেলে শ্রমিক বেলাল হোসেন ইটভাটার একটি ঘরে স্বামী-স্ত্রীর থাকার ব্যবস্থা করে দেন।ধ
ধর্ষণের শিকার নারী সাংবাদিকদের জানান, গত ১৬ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে শ্রমিক বেলাল হোসেন ও আবুল কালাম ঘরে প্রবেশ করে তাঁর স্বামীর সঙ্গে কিছুক্ষণ আলাপ করেন। এর পর আবুল কালাম বাইরে চলে যান। কিছুক্ষণ পর স্বামীর সহায়তায় বেলাল হোসেন তাঁকে ধর্ষণ করেন। এর পর ইটভাটার ওই ঘরে তাঁকে জিম্মি করে রাখেন। পরে ১৮ অক্টোবর রাতে শ্রমিক হৃদয় ও মহিন উদ্দিন ঘরে ঢুকে তাঁর স্বামীর সহায়তায় ধর্ষণ করেন। ২০ অক্টোবর রাতে একই কায়দায় ঘুমন্ত অবস্থায় শ্রমিক হৃদয় তাঁকে আবারও ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় তাঁর স্বামী এই ঘটনা কাউকে না জানাতে মারধর করেন। ইটভাটার অন্য শ্রমিকরা বিষয়টি জানতে পেরে তাঁর বাবাকে জানান। গত বৃহস্পতিবার স্থানীয়দের সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়।চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি হিলাল উদ্দিন আহমেদ জানান, শুক্রবার ওই নারীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে রাতভর অভিযান চালিয়ে পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার দুপুরে মামলা নিয়ে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় আর কেউ সহায়তা করেছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।