মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হল শারদীয় দুর্গোৎসব

  • আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১০৯ দেখেছেন :

অনলাইন ডেক্স 

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হল হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) ভোর থেকেই মণ্ডপগুলোতে ভক্তদের ভিড় দেখা যায়। ভক্তরা দেবীর চরণে অঞ্জলি দিয়ে বিজয়ার প্রার্থনা করেন। পরে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।

এর আগে বিহিত পূজা আর সিঁদুর খেলার আনন্দঘন মুহূর্তের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুর্গাপূজার দশমীর প্রস্তুতি। সকাল থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে নারী ভক্তরা দেবীর চরণে সিঁদুর নিবেদন করেন এবং পরস্পরের সঙ্গে সিঁদুর খেলায় মাতেন। পূজার শেষ দিনে ভক্তদের মাঝে ছিল আবেগঘন পরিবেশ। দেবীর চরণে প্রণাম করে তাঁকে বিদায় জানানোর প্রস্তুতি চলে সারা দিন ধরে। সিঁদুর খেলার পর ভক্তরা দেবীর কাছে পরিবার ও সমাজের কল্যাণ কামনা করেন।

সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন মণ্ডপে নারী ভক্তরা দশমী বিহিত পূজায় অংশ নেন এবং দেবীর চরণে সিঁদুর নিবেদন করেন। সাধারণত এই অনুষ্ঠানে বিবাহিত নারীরা দেবীর চরণে সিঁদুর দান করেন এবং তা কৌটায় রেখে সারা বছর ব্যবহার করেন। এ সময় তারা একে অপরের কপাল ও চিবুকে দেবীর চরণ স্পর্শ করা সিঁদুর লাগিয়ে দেন।

বিকেল থেকে ঢাকের বাদ্য আর গান-বাজনা ছাড়া বিদায়ের করুণ ছায়ায় সারিবদ্ধভাবে একে একে বুড়িগঙ্গা নদীতে বিসর্জন দেয়া হয় প্রতিমা। একই সময়ে তুরাগ নদীতে চলে বিসর্জন। সড়কে পুলিশের টহল ও নদীতে ছিল নৌপুলিশের টহল। ফায়ার সার্ভিসের টিমও দায়িত্ব পালন করে।

এর আগে দুপুরে পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ উদ্যোগে বের হয় বর্ণাঢ্য এক বিজয়া শোভাযাত্রা। বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জনে অংশ নিতে দুপুরের পর থেকেই ভক্তরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপ থেকে ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে সমবেত হতে শুরু করেন পলাশীর মোড়ে।

পরে শত শত ট্রাক প্রতিমা নিয়ে সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। ঢাকেশ্বরী থেকে শুরু করে প্রতিমা যাত্রাটি শহীদ মিনার, হাইকোর্ট, পুলিশ হেড কোয়ার্টার, গোলাপ শাহ মাজার, কোর্ট এলাকা হয়ে সদরঘাট পৌঁছে। রাস্তায়, বিভিন্ন ভবনে পুলিশ ছিল সতর্কাবস্থায়। রাস্তার পাশে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বলছে, গত বছরের চেয়ে এ বছর আনন্দ, শান্তিতে পূজা উদযাপন হয়েছে। রাজধানীর ১০টি ঘাটে বিসর্জন হচ্ছে দুর্গাপূজার ২৫৪টি মণ্ডপের প্রতিমা। বিসর্জন নির্বিঘ্ন করতে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির ৭ হাজার সদস্য। আর বিসর্জনের সময় নৌ দুর্ঘটনা রোধে টহল দিচ্ছে নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ড।

শাস্ত্রীয় মতে, ২০২৫ সালে মা দুর্গা হাতির পিঠে চড়ে মর্ত্যে আগমন করেছেন এবং দোলায় চড়ে কৈলাসে ফিরে যাবেন। দেবীর আগমন হাতির পিঠে হলে তা অত্যন্ত শুভ হিসেবে গণ্য করা হয়, যা বসুন্ধরাকে শস্য-শ্যামলা ও সমৃদ্ধ করে তোলে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনন্য ক্যাটাগরির সংবাদ
© All rights reserved © Comillakantha.com
Theme Customized By Mahfuz