
প্রতিনিধি মুরাদনগর
কুমিল্লার মুরাদনগরে তিন বিএনপি কর্মীকে গুম করে নির্যাতন চালিয়েছে এক যুবলীগ নেতা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী।
নির্যাতনের শিকার তিনজনকে ওই যুবলীগ নেতা তার টর্চার সেলে নিয়ে দিনভর নির্যাতন করেছে। এ সময় রড, হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে ব্লেড দিয়ে শরীরে স্পর্শকাতর জায়গায় জখম করে এবং প্লাস দিয়ে হাত পায়ের নখ উপড়ে ফেলে। এছাড়াও জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা না দিলে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এসব শনিবার দুপুরে এ অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার নাম নাজমুল হাসান। তিনি মুরাদনগরের সদর ইউনিয়ন যুবলীগ রয়েছেন। এছাড়াও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের ঘনিষ্ঠ সহচর।
মুরাদনগরের স্থানীয়দের অভিযোগ, মুরাদনগরে এখনো আওয়ামী লীগের জুলুম নির্যাতন চলছে। একটি অদৃশ্য শক্তি আওয়ামী লীগ পূর্নবাসন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। এর একটি উদাহরণ সন্ত্রাসী নাজমুল। সে এর পূর্বেও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের বাড়িতে মধ্যরাতে হামলা চলায়। কায়কোবাদের একটি বাড়ির দরজায় সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে। এবং বাড়িতে থাকা কায়কোবাদের ভাগিনা উপজেলা বিএনপির সদস্য সোহেল আহমেদ বাবুকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। এছাড়াও এই নাজমুলের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই, মাদকসহ দশটির বেশি মামলা রয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন আরো বলেন, শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার মোচাঘড়া গ্রামের যুবদল কর্মী সবুর খানের ছেলে হৃদয় হাসান, শোলাপুকুরিয়া গ্রামের শ্রমিক দলের কর্মী আব্দুল জলিলের ছেলে এনামুল হক ও হোমনার আব্দুল্লাহকে তাদের কর্মস্থল থেকে তুলে নিয়ে যায় মুরাদনগর সদর আওয়ামীলীগ নেতা ওমর আলীর ছেলে যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসান,রাসেল, শরীফের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী। যুবলীগ নেতা নাজমুল বাহিনীর নির্যাতনে মৃত্যুর মুখোমুখি যুবদল কর্মী এনামুল টাকা দিবে বলে তার বন্ধুুর দোকানে নিয়ে আসলে। এনামুলের বন্ধুরা এনামুলের রক্তাক্ত দেহ দেখে যুবলীগ নাজমুল গংদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এনামুলের তথ্য মতে আহত বাকি দুজনকে নাজমুলের টর্চার সেল থেকে উদ্বার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এনামুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় এনামুলকে ঢাকার একটি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কামাল উদ্দিন ভুইয়া বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে নাজমুল ও তার বাহিনী আমাদের বিএনপি নেতা কর্মীদের উপর নির্যাতন করত। এখনো তারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মুরাদনগর সদরের মত জায়গায় এমন পৈশাচিক কর্মকাণ্ডই প্রমান করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কতটা ভয়ানক অবনতি হয়েছে।
মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, পুলিশ বিএনপি নিধনে ব্যস্ত আর সন্ত্রাসীরা মুরাদনগরে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, যুবলীগ নেতা নাজমুলকে আমি দুইবার গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছি। জানি না এরা কোন মন্ত্রে একদিন পরেই জামিনে বেরিয়ে আসে। গতকালের ঘটনায় আহতদের থানায় দেখিয়ে নিয়ে গেছে। আহতরা চিকিৎসাধীন। এখনো কেউ মামলা করেনি।