স্টাফ রিপোর্টার
দুর্ঘটনার ৮ দিন পরেও জ্ঞান ফিরেনি দক্ষিণ কোরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কুমিল্লার তিন শিক্ষার্থীর। তিনজনকেই দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি রাখা হয়। এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার ওনজু শহরে একটি স্কুটি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয় তিনজন।
আহতরা হলেন- জেলার দেবিদ্বার পৌরসভার ফতেহাবাদ গ্রামের মো. নান্নু মিয়া মাস্টারের ছেলে রাজিদ আয়মান (২০), একই উপজেলার ধামতী ইউনিয়নের ধামতী গ্রামের মো.ওমর ফারুক চৌধুরীর ছেলে হাসিবুল হাসান চৌধুরী এবং বুড়িচং উপজেলার শিহাব। শিহাবের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।
জানা গেছে, আয়মান ও হাসিবুল দুজন বন্ধু। দেশে থাকতে একই সঙ্গে পড়াশোনা করতেন। পড়াশোনায় দুজনই সমান মেধাবী। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন তারা। ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় স্বপ্ন ছিল দুজনের। সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে-২০২৪ সালে তারা উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান দক্ষিণ কোরিয়ায়। ভর্তি হন কিউংডং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ বিভাগে। গত ২৪ আগস্ট রাতে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন তারা। রাজিদ ও হাসিবুল মঙ্গলবার রাতে ওনজু শহরের একটি বাজারে কেনাকাটা করে বাসায় ফেরার পথে শিহাব নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের তাদের অপর এক বড় ভাই তাদের বাসায় পৌছে দেওয়ার জন্য স্কুটিতে তোলেন। স্কুটি চালাচ্ছিলেন শিহাব। কিছুদূর যাওয়ার পর সড়কের স্পিডব্রেকারে (গতিরোধক) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় ছিটকে পড়েন তিনজন। এতে তিনজনই গুরুতর আহত হন। পরে পুলিশ এসে হাসপাতালে নিলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিকিৎসার খরচ চালাতে পথে বসার অবস্থা পরিবার দুটির।
রাজিদ আয়মানের বাবা স্কুল শিক্ষক নান্নু মিয়া বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল উচ্চশিক্ষায় বিদেশে লেখা পড়া করবে। দুই বন্ধু উচ্চ শিক্ষার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার কিউংডং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএতে ভর্তির আবেদন করে। মেধা তালিকায় সেখানে সুযোগ পাওয়ার পর আমি অনেক কষ্টে টাকা ম্যানেজ করে তাকে সেখানেই পাঠাই। গত মঙ্গলবার রাতে স্কুটি দুর্ঘটনায় তারা দুইজন আহত হয়ে এখন হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি। তার এখনো জ্ঞান ফিরেনি। সেখানে তাদের সহপাঠিদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। আমি আমার ছেলের জন্য সবার নিকট দোয়া চাই। আল্লাহ যেন আমার ছেলেকে আমার বুকে ফিরিয়ে দেন।
হাসিবুল হাসান চৌধুরীর বাবা ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, অনেক কষ্ট করে ছেলেকে উচ্চ শিক্ষার জন্য কোরিয়া পাঠিয়েছি। কিন্তু ভাগ্য খারাপ ছেলেটি তার বন্ধুসহ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আইসিইউতে আছে। সেখানকার হাসপাতালে অনেক চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। চিকিৎসার খরচ চালাতে গিয়ে খুবই বাজে অবস্থা আমার। তবুও ছেলেটি যদি সুস্থ হয়ে উঠত আপসোস ছিল না। দেশবাসী যেন তাদের জন্য দোয়া করে যেন তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।