স্টাফ রিপোর্টার :
কুমিল্লা তিতাসে সায়মন আরিয়ান (৭) নামের এক শিশু হত্যা অভিযোগে একজনকে মৃত্যুদণ্ড; আরেকজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক সাব্বির মাহমুদ চৌধুরী এ রায় দেন। সায়মন জেলার তিতাস উপজেলার কলাকান্দি গ্রামের আবুল কাসেমের ছেলে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিল্লাল পাঠান তিতাস উপজেলার বিরামকান্দি গ্রামের মোঃ খেলু পাঠানের ছেলে এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি শেফালী আক্তার (৪৩) একই উপজেলার কলাকান্দি গ্রামের জামাল মিয়ার স্ত্রী। দণ্ডপ্রাপ্তরা উভয়ে শ্যালিকা ও দুলাভাই সম্পর্ক। রায় ঘোষণাকালে উভয় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৬ আগস্ট বিকালে সায়মন স্থানীয় বাতাকান্দি বাজারে গিয়ে নিখোঁজ হন। রাতে সে বাড়ীতে ফিরে না আসায় তার মা খোরশেদা আক্তার আত্মীয় স্বজনের সহায়তায় সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে ১৮ আগস্ট তিতাস থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পরদিন গ্রামের একটি বালুর মাঠের ঝোপের মধ্যে সায়মনের অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সায়মনের মা বাদী হয়ে তিতাস থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ২২ আগস্ট একই বাড়ির শেফালী আক্তার এবং ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেফালীর ভগ্নিপতি মোঃ বিল্লাল পাঠানকে গ্রেপ্তার করে। হত্যার দায় স্বীকার করে বিল্লাল হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। হত্যার পর ওই শিশুকে ঝোপের ভেতর রাখা হয়। ২০২৪ সালের ৮ অক্টোবর আসামি বিল্লাল ও শেফালী আক্তারের বিরুদ্ধে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আদালতের অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট মোঃ ইকরাম হোসেন বলেন, সায়মনের চাচী শেফালী বেগমের সাথে বিল্লালের (শ্যালিকা-দুলাভাই) অন্তরঙ্গ মুহুর্ত দেখে ফেলায় আসামিরা পরষ্পর যোগসাজশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে শিশু সায়মনকে হত্যা করে। চলতি বছর ২৭ ফেব্রুয়ারী তাহাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। শুনানীতে ১৫জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি মোঃ বিল্লাল পাঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড অপর আসামি শেফালী আক্তারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।
নিহত সায়মনের মা ও মামলার বাদী খোরশেদা আক্তার বলেন, আমি আদালতের এই রায়ে সন্তুষ্ট। আমি রাষ্ট্রের কাছে আমার সন্তান হত্যাকারীদের শাস্তি দ্রুত বাস্তবায়ন করার আবেদন জানাচ্ছি। তবে রায় ঘোষণার পর আদালতে উপস্থিত আসামিদের স্বজন ও আইনজীবী রায়ের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজী হননি।