
কুমিল্লা কণ্ঠ রিপোর্ট :
কুমিল্লা বোর্ডে এসএসসিতে সেরা অনামিকা দেবনাথ বলেছেন ‘ ঘন্টার পর ঘন্টা গাইড বই নিয়ে বসে থেকে পরীক্ষার হলে লিখে আসলেই ভাল ফলাফল আশা করা যায় না। কারণ ভালো ফলাফলের জন্য একটু ব্যতিক্রম লেখা চাই, তাই ভাল নম্বর পেতে হলে শিক্ষকদের সহায়তায় ও নিজের চেষ্টায় হ্যান্ড নোট করে গাইড বই নির্ভরতা কমাতে হবে।’ সদ্য প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে কুমিল্লা বোর্ড শিক্ষা বোর্ডে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে শীর্ষে আছেন ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অনামিকা দেবনাথ। সে ১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৬৪ নম্বর পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। অনামিকা দেবনাথ কুমিল্লা নগরীর দিগম্বরীতলা এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা দিলীপ কুমার দেবনাথ উত্তরা গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজের এক্সিকিউটিভ ম্যানেজার এবং মা বিনা রাণী দেবনাথ কুমিল্লার ঝাকুনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত আছেন।
বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ১০ জুলাই চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে পাশের হার ছিল ৬৩.৬০ শতাংশ। অনামিকা দেবনাথ কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মোট ১৩০০ নম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১২৬৪ নম্বর পেয়েছে।
অপরদিকে, ১২৬১ পাওয়া তাসনুভা ইসলাম তোহা কুমিল্লা নগরীর নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। সে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের চুলাশ গ্রামের শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে। তোহা বুয়েটে অধ্যয়ন করে প্রকৌশলী হতে ইচ্ছুক।
অনামিকা দেবনাথ সমকালকে বলেন, ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজের সকল শিক্ষকের তত্ত্বাবধান ও যুগোপযোগী পাঠদানের কারণেই এমন ফলাফল সম্ভব হয়েছে। আমি আবাসিকে থেকে লেখা পড়া করেছি। শিক্ষকরা আমাকে কখনোই মা-বাবার শূন্যতা বুঝতে দেননি। আমি প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিনই শেষ করতাম, এর জন্য ‘স্পেশাল শিডিউল’ করেছি। বিশেষ করে পরীক্ষা শুরুর আগের তিনমাস আমি ক্লাসের পরেও প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘন্টা পড়াশুনা করেছি। মোবাইল ব্যবহারের অনুমতি ছিল না। তাই সপ্তাহে দুই তিন শিক্ষকদের বাটন মোবাইল দিয়ে পরিবারের সাথে কথা বলার সুযোগ দেয়া হতো। নিয়মিত ক্লাস ও মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করলে সকল শিক্ষার্থীই ভালো ফলাফল করতে পারবে। তবে গাইড বইয়ের উপর নির্ভরতা থাকলে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব নয়। অনামিকা আরও বলেন, ‘সকলেই তো চিকিৎসক কিংবা প্রকৌশলী হতে চায়, আমার ইচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে লেখা পড়া করা। আমি এ বিষয়ে ভবিষ্যতে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিবো ইনশাল্লাহ।’
অনামিকার মা স্কুল শিক্ষিকা বিনা রাণী দেবনাথ বলেন, অনামিকা ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় মনোযাগী। সে নবাব ফয়জুন্নেছায় সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিল। এর পর ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। তার স্কুলের শিক্ষকরা তার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন। আমি অধ্যক্ষসহ সকল শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।