সংবাদদাতা, নাঙ্গলকোট
নাঙ্গলকোটে আলাউদ্দিন নামের একজন সাবেক ইউপি সদস্যকে বাড়ির কাছ থেকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
রোববার দুপুর সোয়া ১ টার দিকে উপজেলার চান্দাশ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আলাউদ্দিন বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের আলিয়ারা গ্রামের মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে। তিনি স্বানীয় বক্সগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক সদস্য ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের আলিয়ারা গ্রামে শেখ ফরিদ এবং সালেহ আহাম্মদ মেম্বার ও নিহত আলাউদ্দিন মেম্বার গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষ, হামলা, ভাংচুর, লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আদালত ও নাঙ্গলকোট থানায় উভয় পক্ষের বেশকয়েকটি মামলা চলছে। সর্বশেষ রোববার দুপুরে আলাউদ্দিন মেম্বার তার চাচতো ভাই একই গ্রামের আবুল বাশারের জানাজা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির সামনে থেকে সন্ত্রাসীরা সিএনজি অটোরিকশা যোগে তাকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যায়।
নিহতের স্বজনরা বলেন, ,দীর্ঘ দিন ধরে একই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন ও সালেহ আহমেদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। তার হাত পা বেঁধে সিএনজি চালিত অটোরিকশাতে তুলে নেয়ার পরে বাড়ি থেকে অন্তত ১০ কিলোমিটার দূরে চান্দাশ এলাকায় নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে সড়কের পাশে ফেলে দেয়। পরে স্বজনরা আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। এ ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
নিহত আলাউদ্দিন মেম্বারের ভাগিনা আনোয়ার হোসেন বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে সালেহ আহমদ মেম্বার,তার সহযোগী শেখ ফরিদ,শহীদ সহ মুখোশধারী কয়েকজন সন্ত্রাসী তার মামাকে সিএনজি যোগে অপহরণ করে নিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে সড়কের পাশে ফেলে দেয়। তিনি আরও বলেন, সালেহ আহমেদের সাথে তার মামার বিরোধ নিয়ে মামলাও চলমান আছে। সেই বিরোধ নিয়ে এ হত্যার ঘটনা। তবে এ বিষয়ে চেষ্টা করেও সালেহ আহমেদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে আলাউদ্দিনের নিহতের ঘটনায় তার লোকজন শেখ ফরিদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের আশংকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল আমিন জানান, ওই এলাকায় কয়েকটি গোষ্ঠীগত দ্বন্ধ দীর্ঘ ২০-২৫ বছরের। কিন্তু আলাউদ্দিন মেম্বারকে কারা হত্যা করেছে এটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায় নি। এই দ্বন্ধ নিরসনে আগেও অনেকে চেষ্টা করা হয়েছিলো শুনেছি। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সাথে জড়িতদের ধরতেও অভিযান পরিচালনা করছে।
নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম বলেন, উনার মাথায় আঘাতের চিহৃ রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে মাথায় গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নাঙ্গলকোট থানার ওসি একে ফজলুল হক জানান, দুই ইউপি সদস্যদের বিরোধ নিয়ে এ হত্যার ঘটনা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে । এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। ওসি আরও বলেন, নিহত ব্যক্তির মাথা ও শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তবে গুলির বিষয়টি ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে৷ খুনের সাথে জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।।